বাংলাদেশে থেকে বেশিরভাগ প্রবাসী সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দুবাই ও মালয়েশিয়া যেতো। কিন্তু এখন কার সকল প্রবাসী দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পিছনের কারণে অধিক পরিমাণে কাজ পাওয়া যায়। সেই সাথে ভালো মানের বেতন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এই দেশে আসতে অনেক টাকা লাগবে। সৌদি, মালয়েশিয়ার থেকে দক্ষিণ কোরিয়া আসতে আরও ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা বেশি লাগে। দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা জেনে এই দেশে আসতে হবে।
কম খরচের মধ্যে রয়েছে সরকারি ও স্টুডেন্ট ভিসা। এছাড়া লটারির মাধ্যমে ফ্রিতে আসা যায়। সবচেয়ে বেশি টাকা লাগে বেসরকারি ভাবে বা কোম্পানির মাধ্যমে আসতে। দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে, ভিসা ও পাসপোর্ট খরচ ইত্যাদি জেনে এই দেশে আসবেন। সাউথ কোরিয়াতে কোন ভিসাতে আসতে কত টাকা লাগবে বিস্তারিত জেনেনিন।
দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
কম খরচে দক্ষিণ কোরিয়াতে আসা যায়। এজন্য সরকারি ভিসায় আবেদন করতে হবে। ফ্রিতে আসার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার লটারি জিততে হবে। আর স্টুডেন্টদের জন্য স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া আসার সুযোগ আছে। এখানে আসতে বেশি টাকা খরচ হয় বেসরকারি ভিসার মাধ্যমে। কেননা বেসরকারি ভিসা গুলো বাংলাদেশি এজেন্সিদের মাধ্যমে তৈরি করতে হবে। তবে প্রায় সব সময় যেকোনো এজেন্সি থেকে বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন কাজের ভিসা পাওয়া যায়।
দক্ষিণ কোরিয়াতে আসতে বিমান ভাড়া, পাসপোর্ট, ভিসা, মেডিকেল টেস্ট ও অন্যান্য খরচ আছে। পাসপোর্ট বানাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাগে। মেডিকেল টেস্ট এর জন্য ১৫ হাজার বা এর বেশি লাগে। এছাড়া কোরিয়া ভাষা শিখতে ২০ থেকে ৪০ টাকা লাগবে। ভিসা বানাতে ৮ থেকে ১৪ লাখ টাকা লাগে। বোয়েসলে ফি ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। বিমান ভাড়া ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজারের উপরে। এসব কিছু মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে ১০ থেকে ১৬ লাখ টাকা লাগে।
দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে ২০২৪
২০২৪ সালের যদি দক্ষিণ কোরিয়াতে থেকে কাজের নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে সেখানে আবেদনের মাধ্যমে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার মধ্যে কোরিয়া যাওয়া সম্ভব হবে। সাউথ কোরিয়াতে নতুন কাজের প্রজেক্ট শুরু হলে অতিরিক্ত শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশে ভিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। এটা সরকারি ভাবে লোক নেওয়া হবে। কাজের জন্য অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও কোরিয়া ভাষা জানলে এই ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। তাদের কাছে সিলেক্ট হলে কাজের ভিসার পারমিশন পেয়ে যাবেন।
আর বেসরকারি ভাবে কোরিয়াতে যেতে ১০ লাখের উপরে টাকা লাগবে। বর্তমান সময়ে ডলারের বেড়ে যাওয়ায় টিকিটের দাম ও ভিসার দাম অনেক বেশি। সব কিছু মিলিয়ে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা পেতে প্রচুর টাকা লাগে। নিম্নক্ত কয়েকটি ভিসায় কম খরচে এই দেশে আসতে পারবেন।
- কৃষি ভিসা ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা
- রেস্টুরেন্ট ভিসা ৮ লাখ টাকা
- শ্রমিক ভিসা ৭ লাখ টাকা
- লেভার ভিসা ৭ লাখ টাকা
- স্টুডেন্ট ভিসা ৫ লাখ টাকা
- টুরিস্ট ভিসা ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা
- সাধারণ কোম্পানি ভিসা ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা
কোম্পানি ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
চাইলে সবাই কোম্পানি ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পারে না। কেননা এই দেশের অনেক বড় বড় কোম্পানিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। যেখানে চাকরি পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কাজের পুর্ন দক্ষতা লাগে। তবে ক্লিনার কোম্পানি, রেস্টুরেন্ট কোম্পানির মতো স্থানে কোরিয়ান ভাষা জানা থাকলে কম টাকা লাগে। কোম্পানির ধরনের উপর ভিত্তি করে এই ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়াতে আসতে ৮ লাখ থেকে ১৪ লাখ টাকা লাগে।
স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
উচ্চশিক্ষার জন্য ফ্রিতে স্কোলারশীপ পেয়ে দক্ষিণ কোরিয়াতে আসার সুযোগ আছে। সকল দেশের স্টুডেন্ট ভিসার দাম অনেক কম। এই দেশে স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লাগে। খুব কম সংখ্যক মানুষ একদম ফ্রিতে স্টুডেন্ট ভিসা পায়। তবে তাদের ২ লাখের মতো খরচ করতে হয়।
টুরিস্ট ভিসায় ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
ভ্রমণের জন্য এই দেশে আসার জন্য টুরিস্ট ভিসা প্রয়োজন। টুরিস্ট ভিসার দাম খুব একটা কম নয়। প্রায় ৭ লাখের উপরে লাগে টুরিস্ট ভিসা বানাতে। এছাড়া টুরিস্ট ভিসার খরচ ভ্রমণের উপর নির্ভর করে। বেশিদিন ভ্রমণের জন্য ভিসা বানালে ভিসার দাম তত বেশি হবে। পরিবারের সাথে গেলে ফ্যামিলি টুরিস্ট ভিসা বানাতে হয়। সেটা পরিবারের সদস্য সংখ্যার উপরে নির্ভর করে।
বেসরকারি ভিসায় দক্ষিণ করিয়ায় আসার জন্য কত টাকা লাগে
কোম্পানির মাধ্যমে বা এজেন্সির মাধ্যমে যে সব ভিসা বানানো হয় সেগুলো সব বেসরকারি ভিসা। এই ভিসায় অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যাবে। তবে কাজের জন্য দক্ষতা অর্জন করে নিতে হবে। ভিসার ধরনের উপর নির্ভর করে বেসরকারি ভিসায় দক্ষিণ করিয়ায় আসার জন্য কত টাকা লাগতে পারে। তবে ১০ থেকে ১২ লাখের উপরে টাকা লাগবে।
লটারির মাধ্যমে আসতে কত টাকা লাগে
লটারির মাধ্যমেও দক্ষিণ কোরিয়াতে আসতে হবেন । এজন্য লটারি জিততে হবে। লটারি ভিসায় যেকোনো কাজের জন্য আসতে পারবেন না। লটারি যে ভিসার জন্য জিতেছেন, ঐ ভিসায় যে ক্যাটাগরি কাজ আছে সেগুলো করতে হবে। এখানে আসতে আপনার শুধু বিমান ভাড়া লাগবে। আর সকল খরচ মিলিয়ে ২ লাখ টাকা লাগে লটারি ভিসা আসাতে।
সরকারি ভিসায় দক্ষিণ করিয়ায় আসার জন্য কত টাকা লাগে
সরকারি ভিসা খুব বেশি পাওয়া যায় না। এজন্য অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে। আর এই ভিসার নিয়োগ থাকে ২০০ থেকে ৩০০ জনের। কিন্তু আবেদন করে কয়েক হাজার। যাদের কাজের অভিজ্ঞতা আছে ও ঐ দেশের ভাষা জানে তারাই সরকারি ভিসা পায়। সরকারি ভিসায় দক্ষিণ করিয়ায় আসার জন্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাগে।
শেষ কথা
প্রতিনিয়ত ভিসার খরচ, বিমানের টিকিটের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে ২০২৪ সালে যেকোনো দেশে যেতে বেশি টাকা খরচ করতে হয়। যদি আপনি কোণ কাজ না জেনে থাকেন তাহলে দক্ষিণ কোরিয়ার কোণ ভিসায় আবেদন করতে পারবে না। তাই ভিসার পিছনে না ছুতে আগে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। আশা করছি দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আরও দেখুনঃ