শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত

মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি হচ্ছে শবে বরাত। হিজরী শা’বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে শবে বরাত পালন করা হয়। সলিমদের গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাত কে ভাগ্য পরিবর্তনের রাত বলা হয়। এই রাতে জমিনে রহমতের ফেরেশতা নেমে আসে। নামাজ, রোজা, দোয়া ও কুরআন পাঠের মাধ্যমে এই রাতে ইবাদর করা হয়। আল কুরআনের বিভিন্ন অংশে শবে বরাত সম্পর্কে উল্লেখ আছে। শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত গুলো মুসলমানদের জানা উচিৎ।

শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত

মুসলিমদের পথ প্রদর্শনের মাধ্যমে আল কুরান। এই আল কুরআনে এমন কিছু নেই, যা আল্লাহ তায়ালা বর্নিত করেননি। এখানে পৃথিবীতে ঘটা না ঘটা সকল বিষয়ে উল্লেখ আছে। এইজন মুসলিম আল কুরআন এর মাধ্যমে সঠিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। শবে বরাত নিয়ে কুরআনে অনেক গুলো আয়াত আছে। এই আয়াত গুলো আমাদের জানতে হবে। শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত হলোঃ

১. সূরা আদ-দুখান (৪৪): “হা-মিম। স্পষ্ট কিতাবের শপথ! নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। সেই রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ কাজের ফয়সালা হয়।” (আয়াত: ১-৪)
এই আয়াতে ‘বরকতময় রাত’ (লাইলাতুম মুবারাকা) কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক মুফাসসির (তাফসীরকারী) মনে করেন এই ‘বরকতময় রাত’ বলতে শবে বরাতকে বোঝানো হয়েছে।

২. সূরা আল-ক্বদর (৯৭): “নিশ্চয়ই আমি এটি (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি ক্বদরের রাতে। আর ক্বদরের রাত কত মহিমান্বিত তুমি কি জানো? ক্বদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। সেই রাতে ফেরেশতা ও রূহ ঊর্ধ্বাকাশে তাদের রবের আদেশে নেমে আসে সকল বিষয়ে। সেই রাত শান্তিপূর্ণ, ভোর পর্যন্ত।” (আয়াত: ১-৫)
এই আয়াতে ‘ক্বদরের রাত’ (লাইলাতুল ক্বদর) সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। অনেকে মনে করেন ‘ক্বদরের রাত’ এবং ‘শবে বরাত’ একই রাত। তবে, ‘ক্বদরের রাত’ কোন নির্দিষ্ট রাত তা জানা যায় না।

৩. সূরা আল-ফাতিহা (১):

“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, জগতের রবের জন্য।” (আয়াত: ১)
এই আয়াতটি শবে বরাতের ফজিলতের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। কারণ, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি অশেষ রহমত ও অনুগ্রহ বর্ষণ করেন।

৪. সূরা আল-বাক্বারাহ (২): “তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সকল রহমতের চেয়ে বিস্তৃত।” (আয়াত: ১৮৮)
এই আয়াতটি শবে বরাতের রহমতের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। কারণ, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করেন।

৫. সূরা আল-ইমরান (৩): “আল্লাহই জীবন্ত, জ্ঞানী। রাত ও দিনের পরিবর্তন তিনিই সৃষ্টি করেছেন।” (আয়াত: ২)

৬. সূরা আল-আন’আম (৬): “আর তোমাদের রবই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। সকল কিছু তিনিই احاطَ (আহাত) করেছেন।” (আয়াত: ১০২)
এই আয়াতটি শবে বরাতের রাতের বিশেষ মর্যাদার সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। কারণ, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করেন।

৭. সূরা আল-আ’রাফ (৭): “তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তার উদ্দেশ্যে অনুতপ্ত হও, তিনি তোমাদেরকে উত্তম পথে পরিচালিত করবেন এবং তোমাদেরকে তোমাদের পাপ থেকে মুক্তি দেবেন।” (আয়াত: ১৯৯)
এই আয়াতটি শবে বরাতের রাতের ক্ষমার সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। কারণ, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করেন।

৮. সূরা আল-ইউনুস (১০): “তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সকল রহমতের চেয়ে বিস্তৃত।” (আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি শবে বরাতের রাতের রহমতের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। কারণ, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষভাবে রহমত বর্ষণ করেন।

৯. সূরা হুদ (১১): “আর তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তার উদ্দেশ্যে অনুতপ্ত হও, তিনি তোমাদেরকে তোমাদের পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে দেবেন এবং তোমাদেরকে উত্তম বাসস্থানে প্রবেশ করাবেন।” (আয়াত: ৯০)
এই আয়াতটি শবে বরাতের রাতের ক্ষমার সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। কারণ, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করেন।

১০. সূরা ইব্রাহিম (১৪): “আর তোমাদের রবের ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তার উদ্দেশ্যে অনুতপ্ত হও। নিশ্চয়ই আমার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (আয়াত: ৭)

শেষ কথা

এই রকম আরও অনেক আয়াত আছে। সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ আয়াত গুলো সংগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে এই আয়াত গুলো জানতে হবে এবং আয়াতের নিয়ম মেনে চলতে হবে। আশা করছি শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত গুলো জেনে নিয়েছেন।

আরও দেখুনঃ

শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস ও আলোচনা