বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে ও কেনো পালন করা হয়

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে। অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা লাভ করলেও তা পালন করা হয় মার্চ মাসে। কেনই বা মার্চ মাসে এই দিবস উদযাপিত হচ্ছে এবং কেনো প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয় তা অনেকের অজানা। তাই এখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে ও কত তারিখে পালন করা হয়।

স্বাধীনতা দিবস পালনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস, এর প্রেক্ষাপট, কিভাবে স্বাধীনতা আমাদের হলো, কেনো স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিলো এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস

বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতি বছর মার্চ মাসে স্বাধীনতা দিবস পালন করে। মুক্তি যুদ্ধের পরের বছর থেকে শুরু হয় এই দিবসের যাত্রা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতকে বাঙ্গালিদের জন্য কাল রাত বলা হয়। ঐ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙ্গালিদের উপর গণহত্যা চালায়। সেই রাতে অনেক বাঙ্গালি-ছাত্র জনতা নিহত হয়। এরপর ২৬ শে মার্চ রাতের প্রথম প্রহরে বাঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালিদের উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের ভাষণ দেন।

তিনি বাঙ্গালিদেরকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর যুদ্ধ শুরু করার আহ্বান জানান। এর পর তিনি বাংলাদেশ কে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে যান। তখন ঐ দিন টি ছিলো মার্চ মাসের ২৬ তারিখ। এরপর থেকে সারা বাংলাদেশে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করা শুরু হয়। ২০২৩ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতার ৫২ বছরের পুর্তি পূর্ণ হয়েছে।

স্বাধীনতা দিবস কেনো পালন করা হয়

শুধু যে বাংলাদেশেই স্বাধীনতা দিবস পালন করে তা নয়। বিশ্বের অন্যান্য স্বাধীন দেশে তাদের দেশের সময় বা মাস অনুযায়ী স্বাধীনতা উদযাপন করে। বাংলাদেশেও স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। কারণ বাংলাদেশও একটি স্বাধীন দেশ। স্বাধীনতার স্মৃতি সম্বরণে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য স্বাধীনতা দিবস কেনো পালন করা হয়। এটি আমাদের গৌরব ও অহংকার। বন্ধুবন্ধু শেখা মুজিবুর রহমান নিজে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। এরপর থেকে প্রতি বছর মার্চ মাসের ২৬ তারিখে শুধু বাংলাদেশে এই দিন টি উদযাপন করা হয়।

স্বাধীনতা দিবস পালনের মাধ্যমে আমরা যারা দেশ কে স্বাধীন করেছে তাদের সম্মান জানাই। এই দিন টি ভুলে যাওয়ার মতো নয়। প্রতিনিয়ত স্বাধীনতা দিবস পালন না করলে এক সময় বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাস থেকে স্বাধীনতা দিবস মুছে যাবে। আমরা একে মনে রাখলেও আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম তারা স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কিছু বুঝবে না। তাই সবাইকে পূর্বের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য হলেও প্রতিনিয়ত স্বাধীনতা দিসব পালন করতে হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে পালন করা হয়

বিশ্বের সকল দেশেই এই দিবস টি পালন করা হয় না। যারা শুধুমাত্র স্বাধীন রাষ্ট্র তারাই বিশেষ দিনে পুরানো স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে মহান স্বাধীনতা সিবস পাল করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ শে মার্চ পালন করা হয়। বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস পালনের সূচনা ঘটে ১৯৭২ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানেও এই দিন টি পালিত হচ্ছে। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা। এর পিছনে আমাদের মুক্তিবাহিনীর অবদান রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা স্মরণে ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্ব

বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। তবে এই স্বাধীন হওয়ার পিছিনে ঘটেছে নানা ধরনের অতিহাসিক ঘটনা। লাখ লাখ বাঙালি দিয়েছে তাদের প্রাণ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলের মাধ্যমে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের আবির্ভাব ঘটে। দিনটি ছিলো ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ। যাকে কাল রাত ও অপারেশন সার্চ লাইট বলা হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের কাল রাতে পাকিস্তান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী পাকিস্তানি সেনারা ঢাকার বিভিন্ন অংশে ঘুমিন্ত নিরীহ বাঙ্গালিদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই রাতে অনেক বাঙালি, বুদ্ধিজীবী ও ছাত্র জনতা শহিদ হয়েছে।

এরপর ২৬ শে মার্চ রাতের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দেন। টিকিট বাঙ্গালিদের কে যুদ্ধে নামার জন্য আহ্বান করে। এই রাতে বঙ্গবন্ধু শেখা মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষাপটে সকল স্তরের বাঙালি মুক্তি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার এই স্বাধীনতা ঘোষণার পড়ে পাকিস্তানি সেনারা গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস উৎযাপন

প্রতি বছরে এক বার এই দিন টি আমাদের মাঝে আসে। এই দিনে সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের উৎসব ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করে। এই দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে উদ্‌যাপন শুরু হয়। সকল সরকারি, বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সারা দিন জুড়ে সমাবেশ, মিটিং ও অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে। স্কুল, কলেজ এর পাঠক্রম বন্ধ থাকে, তবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সহ এই দিন টি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হয়।

আজকে স্বাধীনতার কত বছর

আমাদের শব্দহীনতার পুর্তি ৫০ বছর পার করেছে গত কয়েক বছর আগেই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা হলেও, এই দিনটি পালন করা হয় ১৯৭২ সাল থেকে। এই ভাবে দিনের পর দিন প্রতি বছর সর্বস্তরের জনগণ স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হয়েছে। তবে ২০২৩ সালে এটি ৫২ বছরের পুর্তি লাভ করেছে। বাংলাদেশ আজ ৫২ বছর ধরে স্বাধীনতা লাভ করেছে। আজকে বংলাদেশে স্বাধীনতার ৫২ বছর। 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে পালিত হয়

একটি দেশ যখন নিজের অধীনে চলতে পারে তাকেই সেই দেশের স্বাধীনতা বলা হয়। বাংলাদেশ আজকে স্বাধীন দেশ। তাই বাংলাদেশ নিজের অধীনেই চলতে থাকে। তবে এই স্বাধীনতার পিছনে রয়েছে নানা ইতিহাস ও তাৎপর্য। রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। প্রতি বছর ২৬ মার্চে শব্দহীনতা দিবস উদযাপিত করা হয়। বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস মার্চের ২৬ তারিখে পালিত হয়। 

শেষ কথা

প্রতিটি দিন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে ২৬ শে মার্চ আমাদের জন্য এক স্মরণীয় দিন। এই দিনের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে উদযাপন করে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করি। আমাদের সবাইকে ২৬ শে মার্চের স্বাধীনতা দিবসে উদযাপন করতে হবে। এই দিন কে মনে রাখতে হবে। এখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে ও স্বাধীনতা দিবস কেনো পালন করা হয় এই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছি। তাই আপনারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পেরেছেন।

আরও দেখুনঃ

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস কবে পালন করা হয়