ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় হচ্ছে রোজা। রোজা সিয়াম বা সাওমও বলা হয়। সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকাকে রোজা বা সাওম বলে। রমজান মাসের রোজা কে ফরজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রোজা রাখার জন্য অনেক গুলো নিয়ম কানুন মানতে হবে। আমাদের অজানা ভুলের কারণে রোজা ভেঙ্গে যেতে পারে। যে সকল কাজ করলে রোজা ভাঙবে, সে সকল কাজ করা থেকে এই মাস বিরত থাকবো। রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি? যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় জেনে নেওয়া যাক।
রোজা ভঙ্গের কারণ
আমাদের নানা রকম ভুলের কারণে রোজা ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই এমন কোনো কাজ করবো না যাতে রোজা পরিপূর্ণ না হয়। যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় এই সকল কারণ জানলে এবং সেগুলো মেনে চললে এই থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। রোজা পালনের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি, আমাদের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখি এবং আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নয়ন লাভ করতে পারি। তাই রোজা ভঙ্গের কারণ জেনে রোজা রাখবো।
- রমজান মাসের দিনের বেলায় বা রোজা থাকা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে রোজা ভেঙে যাবে।
- ইচ্ছাকৃতভাবে কোন কিছু খাওয়া বা পান করলে রোজা ভেঙে যাবে।
- রোজাদারকে জোর করে কিছু খাওয়ালে।
- মুখ ভরে বমি করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। রোজার অবস্থায় বমি করার পর যদি বমির বেশিরভাগ অংশ মুখে এসে যায় এবং সেটা ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেলা হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
- মজান মাসের রোজা রাখা অবস্থায় যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলাম ত্যাগ করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে।
- ভুলে কিছু খাওয়ার পর, যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে খায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
- গোসল করার সময় পুকুরের পানি ও বৃষ্টিতে ভিজে পানি খেলে।
- নাক অথবা কান দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে যদি মুখের ভিতরে যায় এবং তা পেতে চলে আসে তাহলে রোজা ভাঙবে।
- দাঁতের ফাঁক থেকে কোনো কিছু থাকলে তা বের করে খেয়ে ফেললে।
- ইচ্ছে করে কোনো কিভহু খেলে।
যেসব ভুলের ফলে রোজা ভেঙে যাবে না
কিছু ক্ষেত্রে রোজা ভেঙ্গে গেলেও তার জন্য কোনো কাফফারা রোজা আদায় করতে হবে। এগুলো মানুষের শারীরিক সমস্যার কারণে হতে পারে। যদি আপনার নিচের এই সমস্যার কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়, তাহলেও রোজা কবুল হবে। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে এরপরে রোজা ভাঙবেন না। তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
- মেয়েদের মাসিক বা প্রসব রক্তস্রাব শুরু হলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে এই ক্ষেত্রে কেবলমাত্র কাজা আদায় করতে হবে, কাফফারা আদায় করতে হবে না।
- অজ্ঞতাবশত পানাহার করলে রোজা ভাঙবে না।
- ভুলবশত পানাহার করলে রোজা ভাঙবে না। তাই কাফফারা করতে হবে না।
- যদি কেউ রোজার অবস্থায় বমি করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে না। তবে সেই ভমি পেতের ভিতরে গেলে রোজা ভাঙবে।
- রোজার অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যাবে না।
যে সব কারণে রোজা ভাঙ্গা যায়
আমাদের অনেক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয়। এমন অনেক সমস্যা আছে, যেগুলোর জন্য রোজা ভাঙতে পারবেন। পড়ে কাফরা করলেও হবে, না করলেও সমস্যা নেই। কিন্তু নিচের দেওয়া সমস্যা ব্যাতিত রোজা ভাঙ্গা যাবে না।
- পেট ব্যাথা হলে, ওষুধ সেবন করতে হবে। এর জন্য রোজা ভাঙতে পারবেন।
- কোনো বিষাক্ত প্রাণী দংশন করলে চিকিৎসার জন্য রোজা ভাঙ্গা যাবে।
- রোগের কারণে রোজা ভাঙ্গা যাবে।
- গর্ভবতী নারীর কোনো সমস্যা হলে বা গর্ব নষ্ট হওয়ার ভয় থাকলে।
- ছোট শিশুর জন্য দুধ না পাওয়ার আশঙ্কা থাকলে।
- মুসাফির অবস্থায় কোনো সমস্যা হলে।
শেষ কথা
এই পোস্টে রোজা ভেঙ্গের বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করা হয়। এগুলো ব্যাতিত অনেক ধরনের কারণ থাকতে পারে। রোজা রাখলে কোণ হারাম কাজ করা যাবে না। মিস্থা কথা থেকে বিরত থাকবেন। ইসলামের বাইরে যায় এই সকল কাজ করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তাই রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ জানতে হবে এবং পালন করতে হবে।
আরও দেখুনঃ