২১ শে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে আন্তর্জাতিন মাতৃভাষা দিবস। প্রতি বছর এই দিনে বাংলাদেশে শহিদ দিবস পালন করা হয়। দিবস টি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পাওয়ায় বিশ্বের আরও কিছু দেশে মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। আজকের এই দিনে ভাষা দিবস উপলক্ষ্য আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বক্তব্য, ভাষণ ও কিছু কথা বলতে হয়।এই বক্তব্যে ২১ শে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব ও ইতিহাস বলতে হবে। ভাষণের মাধ্যমে পরবর্তি প্রজন্মকে ভাষা দিবস সম্পর্কে জানাতে হবে। কিভেবা বক্তব্য দিতে হবে, তা নিচে শেয়ার করা হয়েছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বক্তব্য
বক্তব্যের শুরুতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে সম্মান জানাতে হবে। এরপর ভাষা শহিদদের স্মরণ করতে হবে। তাদের সম্পর্কে কিছু কথা বলা লাগবে। মাতৃ ভাষার জন্য তাদের ত্যাগের কথা সবাইকে জানাতে হবে।
আজ মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনটির জন্য আমাদের পূর্বে জীবন দিতে হয়েছে। আমাদের ভাষা শহিদদের অবদানে আজকে এই বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি। এই ভাষার পিছনে রয়েছে অনেক ইতিহাস।
১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে বাঙালির ভাষা-অম্বেষা প্রতিরোধে বাংলা ভাষার মানুষের আত্ম-অম্বেষা ঘটে। ঢাকায় ১৯৫২ সালে এই আন্দোলনের সূচনা হয় এবং একুশে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ তার চরম প্রকাশ ঘটায়। ঐদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাজপথে পথ বন্ধ করে এবং পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে কয়েকজন ছাত্রযুবা হতাহত হন। এ ঘটনার পরে মানুষের প্রতিবাদে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি রাজপথে নেমে আসে এবং ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করার লক্ষ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতে এই স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি হয় এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকার এটি গুঁড়িয়ে দেয়।
১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি।
১৯৮৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন বিল’ পারিত। এই বিলের কার্যকর হওয়ার পর থেকে ৮ মার্চ ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা দেশের প্রধান রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পুনর্নির্ধারিত হয়। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এরপর থেকে ভাষা শহিদের স্মরণের ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস পাওন করা হয় এবং শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে তাদের কে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আমাদের সবাইকে এই দিবস পালন করতে হবে। সাথে ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে তাদের কে সম্মান জানাতে হবে। এই বলে আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করছি। আসসালামুয়ালাইকুম।
২১ শে ফেব্রুয়ারি বক্তব্য ২০২৪
১৯৫২ সাল থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ দিবস হিসেবে পূজিত হয়। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে একাদিক্রমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ও সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে। এই সময়ে মিনারে আসা আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি গানের করুণ সুর বাজতে থাকে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষিত হয়। এদিন শহীদ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রেডিও, টেলিভিশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এবং দেশের সংবাদপত্রগুলি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। বাংলা একাডেমি ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে ঢাকায় একুশে বইমেলার আয়োজন করে। এছাড়াও ভারতের কিছু বিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপিত হয়। এই দিনে শহীদদের প্রতি সকলের শ্রদ্ধাশোক জানানো হয়।
শেষ কথা
মাতৃভাষা নিয়ে বক্তব্য গুলো এই ভাবে বলতে হবে। এই বক্তব্যের প্রধান বিষয় হচ্ছে মাতৃভাষা ও ভাষা দিবস সম্পর্কে আলোচনা করা। যেকোনো আলোচনা সভায় উপরের দেওয়া ভাষণ গুলো বলা যাবে। এছাড়া এই ভাষণের সাথে আরও কিছু কথা যুক্ত করে নিবেন। ২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বক্তব্য থেকে ধারনা নিতে পারবেন।
আরও দেখুনঃ