বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় ১৮ মিনিটের একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। এই ভাষণ টি ঐতিহাসিক ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণের মূল উদ্দেশ্য ছিলো, বাঙালি জাতিকে যুদ্ধের জন্য অনুপ্রাণিত করা। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ এ বাংলাদেশের অধিকার তুলে ধরেছি।
২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর, ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই ভাষণটির অনুপ্রস্থানে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, এবং এটি সামরিক আইন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথায় তার দৃঢ় আদর্শ প্রতিষ্ঠান করে।
৭ই মার্চের ভাষণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চ, ১৯৭১ সালের ভাষা আন্দোলনের সময়ে দক্ষিণ পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুইবিকেলের বিশেষ সম্মেলনে তিনি একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন, যা সাধারণভাবে “মুক্তিযুদ্ধের সূচনা” হিসেবে পরিচিত। ভাষণটির মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি মানুষের একজন প্রধান নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সমর্থন জোগান করা এবং একটি স্বাধীন বাংলাদেশের কল্যাণের জন্য একটি আদর্শ পথ প্রদর্শন করা।
বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে তিনি বাঙালি জনগণকে সকল বাধা অতিক্রম করে স্বাধীন বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান করেছেন। তিনি পাকিস্তানি শাসকতা ও উপ-মহাদেশীয় আত্মনির্ভর প্রস্তুতির অভাব এবং পাকিস্তানের শাসনের বৈশিষ্ট্যগুলির উপর একটি চোখ খোলার জন্য একটি ভাষণ দিয়েছেন।
এই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর বাণী থেকে একটি মহত্ত্বপূর্ণ কথা ছিল, “একুশে ফেব্রুয়ারি, তাদের তোমাদের দিকে আসছে সত্যিই হৃদয়জ্বালা, একুশে মার্চ, তোমাদের সমর্থনে আমি চলছি, আমি একটি অট্টহাসি দিয়ে দেখতে চাই, তোমরা কী আসছ তা।”এই ভাষণের পরবর্তী দিনেই বাঙালি জনগণের আগামী পদক্ষেপ হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের দিকে। এই ভাষণ হৃদয়জ্বালা এবং উৎসাহের সাথে ভরা থাকা বাঙালি জনগণকে প্রচুর মাত্রায় একসাথে আসুন এবং স্বাধীনতা জনগণের হাতের মুকুট হোক তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এই একটি ভাষণ বাঙালি জাতীর সম্পূর্ণ ইতিহাস বদলে দেয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ এর মূল কথা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তি ও ন্যায্য অধিকার রক্ষা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের সম্পূর্ণ ঐতিহাসিক ভাষণ ২০২৪
আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বুঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে।
আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। কী অন্যায় করেছিলাম, নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করব এবং এই দেশকে আমরা গড়ে তুলব, এ দেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তেইশ বৎসরের করুণ ইতিহাস বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। তেইশ বৎসরের ইতিহাস মুমূর্ষু নর–নারীর আর্তনাদের ইতিহাস; বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করে দশ বৎসর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯-এর আন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন হওয়ার পর যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন, তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন, গণতন্ত্র দেবেন। আমরা মেনে নিলাম।
তারপরে অনেক ইতিহাস হয়ে গেল, নির্বাচন হলো। আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি, শুধু বাংলার নয়, পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা হিসাবে তাঁকে অনুরোধ করলাম, ১৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে আপনি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দেন। তিনি আমার কথা রাখলেন না, তিনি রাখলেন ভুট্টো সাহেবের কথা। তিনি বললেন, প্রথম সপ্তাহে মার্চ মাসে হবে। আমরা বললাম, ঠিক আছে, আমরা অ্যাসেম্বলিতে বসব। আমি বললাম, অ্যাসেম্বলির মধ্যে আলোচনা করব; এমনকি আমি এ পর্যন্ত বললাম, যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও, একজনও যদি সে হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।
জনাব ভুট্টো সাহেব এখানে এসেছিলেন, আলোচনা করলেন। বলে গেলেন যে আলোচনার দরজা বন্ধ না, আরও আলোচনা হবে। তারপর অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করলাম, আপনারা আসুন বসুন, আমরা আলাপ করে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করি। তিনি বললেন, পশ্চিম পাকিস্তানের মেম্বাররা যদি এখানে আসেন, তাহলে কসাইখানা হবে অ্যাসেম্বলি। তিনি বললেন, যে যাবে তাকে মেরে ফেলে দেওয়া হবে। যদি কেউ অ্যাসেম্বলিতে আসে তাহলে পেশোয়ার থেকে করাচি পর্যন্ত দোকান জোর করে বন্ধ করা হবে। আমি বললাম, অ্যাসেম্বলি চলবে। তারপর হঠাৎ ১ তারিখে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করে দেওয়া হলো।
ইয়াহিয়া খান সাহেব প্রেসিডেন্ট হিসাবে অ্যাসেম্বলি ডেকেছিলেন। আমি বললাম যে, আমি যাব। ভুট্টো সাহেব বললেন, তিনি যাবেন না। ৩৫ জন সদস্য পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এখানে আসলেন। তারপরে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলো। দোষ দেওয়া হলো বাংলার মানুষকে, দোষ দেওয়া হলো আমাকে। বন্দুকের মুখে মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠল।
আমি বললাম, শান্তিপূর্ণভাবে আপনারা হরতাল পালন করেন। আমি বললাম, আপনারা কলকারখানা সবকিছু বন্ধ করে দেন। জনগণ সাড়া দিল। আপন ইচ্ছায় জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ল। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো।
মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ্।
কী পেলাম আমরা? যে আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরিব-দুঃখী আর্ত মানুষের বিরুদ্ধে, তার বুকের উপর হচ্ছে গুলি। আমরা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু। আমরা বাঙালিরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি, তখনই তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। টেলিফোনে আমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তাঁকে আমি বলেছিলাম, জনাব ইয়াহিয়া খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কীভাবে আমার গরিবের উপরে, আমার বাংলার মানুষের উপরে গুলি করা হয়েছে, কী করে আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে। আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন। তিনি বললেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ১০ তারিখে রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স ডাকব।
আমি বলেছি, কিসের বৈঠক বসবে, কার সঙ্গে বসব? যারা আমার মানুষের বুকের রক্ত নিয়েছে, তাদের সঙ্গে বসব? হঠাৎ আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে পাঁচ ঘণ্টা গোপনে বৈঠক করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন, সমস্ত দোষ তিনি আমার উপরে দিয়েছেন, বাংলার মানুষের উপর দিয়েছেন।
ভাইয়েরা আমার, ২৫ তারিখে অ্যাসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে বলে দিয়েছি যে ওই শহীদের রক্তের উপর পা দিয়ে কিছুতেই মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারে না। অ্যাসেম্বলি কল করেছে। আমার দাবি মানতে হবে: প্রথম, সামরিক আইন মার্শাল ল উইথ ড্র করতে হবে, সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত নিতে হবে, যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে, আর জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে । তারপর বিবেচনা করে দেখব, আমরা অ্যাসেম্বলিতে বসতে পারব কি পারব না। এর পূর্বে অ্যাসেম্বলিতে বসতে আমরা পারি না।
আমি, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই। আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দিবার চাই যে আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট-কাচারি, আদালত-ফৌজদারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরিবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে, সে জন্য সমস্ত অন্যান্য জিনিসগুলো আছে, সেগুলির হরতাল কাল থেকে চলবে না। রিকশা, গরুর গাড়ি চলবে, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে; শুধু সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সেমি গভর্নমেণ্ট দপ্তরগুলো, ওয়াপদা কোনো কিছু চলবে না।
২৮ তারিখে কর্মচারীরা বেতন নিয়ে আসবেন। এর পরে যদি বেতন দেওয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে, এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু, আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব। তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ তোমাদের কিছু বলবে না। কিন্তু আর আমার বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা করো না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দমাতে পারবে না।
আর যে সমস্ত লোক শহীদ হয়েছে, আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, আমরা আওয়ামী লীগের থেকে যদ্দুর পারি তাদের সাহায্য করতে চেষ্টা করব। যারা পারেন আমার রিলিফ কমিটিতে সামান্য টাকাপয়সা পৌঁছিয়ে দেবেন। আর এই সাত দিন হরতালে যে সমস্ত শ্রমিক ভাইরা যোগদান করেছেন, প্রত্যেকটা শিল্পের মালিক তাঁদের বেতন পৌঁছায়ে দেবেন। সরকারি কর্মচারীদের বলি, আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হবে খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলো, কেউ দেবে না। মনে রাখবেন, শত্রুবাহিনী ঢুকেছে, নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটপাট করবে। এই বাংলায় হিন্দু মুসলমান বাঙালি অবাঙালি যারা আছে, তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপরে। আমাদের যেন বদনাম না হয়। মনে রাখবেন রেডিও টেলিভিশনের কর্মচারীরা, যদি রেডিওতে আমাদের কথা না শোনেন, তাহলে কোনো বাঙালি রেডিও স্টেশনে যাবেন না। যদি টেলিভিশন আমাদের নিউজ না দেয়, কোনো বাঙালি টেলিভিশনে যাবেন না। দুই ঘণ্টা ব্যাংক খোলা থাকবে, যাতে মানুষ তাদের মায়নাপত্র নিবার পারে। কিন্তু পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে এক পয়সাও চালান হতে পারবে না। টেলিফোন টেলিগ্রাম আমাদের এই পূর্ব বাংলায় চলবে এবং বিদেশের সঙ্গে নিউজ পাঠাতে চালাবেন। কিন্তু যদি এ দেশের মানুষকে খতম করার চেষ্টা করা হয়, বাঙালিরা বুঝে–শুনে কাজ করবেন। প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ্। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
জয় বাংলা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ পটভূমি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চ, ১৯৭১ সালের ভাষা আন্দোলনের ভাষণটি একটি অমূল্য স্বর্ণক্ষণ ছিল, যা বাঙালি জাতির স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিকে একটি অগ্রগতির চিহ্ন হিসেবে পরিচিত। ভাষণের পটভূমি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কথাগুলি অমূল্য দ্রষ্টব্য এবং বিশেষভাবে গভীর আদর্শ ও ইতিহাসের প্রস্তুতির মাধ্যমে এক নতুন জাগরুকতা তৈরি করেছিল।
প্রথমত, ভাষণটি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা আন্দোলনে মানবিক এবং সমর্থনমূলক ভাবে প্রধান নেতা হিসেবে থাকা দাবি করে। তিনি বাঙালি জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতা প্রতি তাদের পূর্ণ অধিকার থাকা উচিত এবং তাদের ক্ষমতার মাধ্যমে সমাজে ন্যায্যতা ও সমরাস বৃদ্ধি করা হোক বলে জানান।
দ্বিতীয়ত, ভাষণটি একটি পথনির্দেশনা দেয় বাঙালি জনগণকে, কোনও অস্ত্র ব্যবহার ছাড়াই স্বাধীনতা অর্জন করার পথে এগিয়ে যেতে বলে। বঙ্গবন্ধু আত্মঘাতি কৃত্যে প্রতিশ্রুতি দেননি, বরং শান্তির মাধ্যমে এবং একটি সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করার আহ্বান করেন।
তৃতীয়ত, ভাষণটি সাধারণ মানুষদের সাথে সংবাদমূলক ভাবে যোগাযোগ করে, তাদের জন্য একটি ইতিহাসগত পঠান তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু মানবিক সম্পর্ক এবং আদর্শবাদের মাধ্যমে বাঙালি জনগণকে সমর্থন ও একজন প্রধান নেতা হিসেবে তাদের প্রেরণা দেন।
এই মৌল্যবান ভাষণে বঙ্গবন্ধুর উদ্দীপক কথাগুলি ছিল একটি জাগরুক জনগণের প্রতি নেতৃত্ব যান্ত্রিক এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার দিকে একটি নতুন প্রস্তুতি এবং একটি প্রশাসনিক নীতির দিকে একটি আদর্শ পথ প্রদর্শন করে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে যা যা উল্লেখ পেয়েছে
- জাতীয় একতা ও সমরাস প্রতি অধিকার: বঙ্গবন্ধু ভাষণে জাতীয় একতা এবং সমরাস বিষয়ে জোর দেন। তিনি বাঙালি জনগণকে একক একক ধর্ম, ভাষা, ও সংস্কৃতির মাধ্যমে সমাজের একতা এবং সমরাস অর্জন করতে আহ্বান করেন।
- স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় ও বিকাশ: বঙ্গবন্ধু মূক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করতে এবং এটির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় ও বিকাশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখান।
- শান্তির মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন: বঙ্গবন্ধু একবার আত্মঘাতি কৃত্য করার পথ নির্বাচন করতেননি, বরং তিনি শান্তির মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করার মাধ্যমে জনগণের একত্র করতে আহ্বান করেন।
- স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ে সকলের অবদান: বঙ্গবন্ধু বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনে সবাইকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে এবং সকলের যোগাযোগ ও অবদানের প্রয়োজন।
- বাংলাদেশের মস্তিষ্ক এবং মানবাধিকার: বঙ্গবন্ধু ভাষণে বাংলাদেশের মস্তিষ্ক এবং মানবাধিকার সম্পর্কে জোর দেন। তিনি জনগণকে বিজ্ঞান, তত্ত্ব, এবং তাদের অধিকারে গর্ব করা উচিত বলে জানান।
শেষ কথা
এই ভাষণ টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। একজন মহান নেতাই পারে দেশ কে নেতৃত্ব দিতে। বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণ টি জাতিসংঘের কাছে মর্যাদা লাভ করে। এখন পর্যন্ত তার মতো করে কেউ ভাষণ দিতে পারেনি। এটি শুধু একটি ভাষণ ছিলো না, এই ভাষণে বাংলাদেশের পূর্বের অধিকার ও স্বাধীনতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা পেয়েছে। এটিই ছিলো সেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ।
আরও দেখুনঃ