শবে মেরাজের আমল ও ফজিলত কি কি

২০২৪ সালের শবে মেরাজের তারিখ প্রকাশ করা হয়েছে। রজন মাসের ২৬ তারিখে সারা বিশ্বের মুসলিমগণ শবে মেরাজ পালন করে। বাংলাদেশে এই বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে শবে মেরাজ পালিত হবে। নামাজ, দোয়া ও বিভিন্ন ইবাদতের মাধ্যমে এই দিন টি পালন করা হয়। এই দিনে অনেক গুলো বিশেষ আমল আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নামাজ। নামাজ এক ধরনের আমল। আজকে শবে মেরাজের আমল ও ফজিলত কি কি এই সম্পর্কে জানব।

শবে মেরাজের আমল

মুসলিমদের বিভিন্ন উৎসব আমলের মাধ্যমে পালিত হয়। মুসলমানের প্রধান কাজ হচ্ছে আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালেকে খুশি করা। নেক আমলের মধ্যে হচ্ছে নামাজ, দোয়া পাঠ, কোরআন পাঠ, বিভিন্ন সুরা ও দরুদ পড়া। এ সকল ইবাদতের মধ্যে শবে মেরাজের আমল এই রাতে নামাজ পড়া। ২ রাকাত করে সর্বনিম্ন ১২ রাকাত নামাজের মাধ্যমে শবে মেরাজের রাতে আমল করতে পারবেন। নামাজ পড়তে কোনো অসুবিধা হলে পাক পবিত্র হয়ে যেকোনো সুরা পাঠ করলেও আমল করা হবে।

শবে মেরাজের বিশেষ আমল সমূহঃ 

  • কোরআন তেলাওয়াত: কোরআন তেলাওয়াত হলো সবচেয়ে উত্তম ইবাদত। শবে মেরাজের রাতে কোরআন তেলাওয়াত করলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
  • নফল নামাজ পড়া: শবে মেরাজের রাতে নফল নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তাই এ রাতে সম্ভব হলে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া উচিত।
  • জিকির-আজগার করা: জিকির-আজগার করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। শবে মেরাজের রাতে আল্লাহর নাম জপ, দোয়া ও ইসতেগফার করা উচিত।
  • সদকা করা: সদকা করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। শবে মেরাজের রাতে সদকা করলে মহান আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।
  • অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগি করা: শবে মেরাজের রাতে অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগিও করা যেতে পারে। যেমন, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া, তাসবিহ-তাহমীদ পড়া, দোয়া করা ইত্যাদি।

আত্মার পরিশুদ্ধি ও ঈমানের দৃঢ়তা

শবে মেরাজ মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ রাত। এ রাতে মহান আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহের বৃষ্টি বর্ষিত হয়। তাই এ রাতে ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকার মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি।শবে মেরাজের আমল সম্পর্কে হাদিস শরিফে কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে এ রাতে বিশেষ কোনো আমলের কথা শরিয়তে নির্ধারিত নয়। তবে যেসব আমল সাধারণত ইবাদতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, সেসব আমল শবে মেরাজেও পালন করা উচিত।

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

শবে মেরাজের রাতে ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি আমাদের নিজেদের আত্মার পরিশুদ্ধি ও ঈমানের দৃঢ়তায় মনোনিবেশ করা উচিত। এ রাতে মহান আল্লাহর কাছে আমাদের সকল পাপ-ত্রুটি ক্ষমা চাওয়া উচিত।শবে মেরাজের রাতে আমাদের অনুভূতি ও আবেগকে কাজে লাগিয়ে আমরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। তাই এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের জীবনকে আলোকিত করে তুলতে পারি।

আমল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা

শুধু আমল করলেই হবে না। এই আমল টি অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য করতে হবে। তাই খেয়াল রাখতে হবে আমাদের আমলের মাঝে যেকোনো কোনো ভুল থাকে না। সঠিক নিয়তের মাধ্যমে আমল করলে আল্লাহ অবশ্যই তা কবুল করবেন।

  • শবে মেরাজের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করার সময় মনের একাগ্রতা বজায় রাখা উচিত।
  • ইবাদত-বন্দেগির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হওয়া উচিত।
  • ইবাদত-বন্দেগি করার সময় বিনয় ও নম্রতার সাথে থাকা উচিত।
  • ইবাদত-বন্দেগি করার সময় শরিয়তের বিধি-নিষেধ মেনে চলা উচিত।

শবে মেরাজের আমলের ফজিলত কি

এই দিনটি ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই রাতে নবী করিম (সা.) আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান পান। শবে মেরাজের ফজিলত অনেক। এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করলে অনেক পুণ্য লাভ করা যায়। শবে মেরাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস শরিফে অনেক বর্ণনা রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “শবে মেরাজের রাতে যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (মুসনাদে আহমাদ)

শবে মেরাজের রাতে আমল করলে করলে নিম্নলিখিত ফজিলত পাওয়া যায়ঃ

  • গুনাহ মাফ হয়: শবে মেরাজের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করলে সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
  • আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়: শবে মেরাজের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।
  • ঈমানের দৃঢ়তা হয়: শবে মেরাজের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করলে ঈমানের দৃঢ়তা হয়।
  • দোয়া কবুল হয়: শবে মেরাজের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করার পাশাপাশি দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।

শেষ কথা

শবে মেরাজ আমাদের জন্য একটি বিরাট শিক্ষা। এ রাতে আমাদের নিজেদের আত্মার পরিশুদ্ধি ও ঈমানের দৃঢ়তায় মনোনিবেশ করতে হবে। এ রাতে মহান আল্লাহর কাছে আমাদের সকল পাপ-ত্রুটি ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং তাঁর কাছে দোয়া করতে হবে। আমলের মাধ্যমে আমরা আরও অনেক ফজিলতও লাভ করতে পারব। তাই আমাদের কে এই রাতে বেশি বেশি শবে মেরাজের আমল করতে হবে।

আরও দেখুনঃ

শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম

শবে মেরাজ কবে ২০২৪