বাঙালি জাতীর জীবনে এক ঐতিহাসিক দিক আজকের মাতৃভাষা দিবস। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতা নেওয়া হয়। সেখানে ২০০ শব্দের একটি রচনা লিখতে হয়। যার রচনাটি ভালো হবে, তাকে পুরস্কিত করা হবে। এজন্য ২১ শে ফেব্রুয়ারি রচনা ২০০ শব্দ এর মধ্যে লিখতে হবে।
সব ধরনের রচনা লিখলে হবে। এজন্য রচনার মান ভালো হওয়ায় লাগবে। রচনাতে ২১ শে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস, তাৎপর্য, ভাষা আন্দোলন ও ভাষার মর্যাদা সম্পর্কে সব কিছু মিলিয়ে লিখতে হবে। এই রচনা সম্পূর্ণ ভাষা আন্দোলনকে ২০০ শব্দের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে হবে। নিচে এই রকম রচনা গুলো দেওয়া আছে। এই রচনা গুলো ছোট-বড় সবাই লিখতে পারবে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি রচনা ২০০ শব্দ
ভুমকাঃ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মাতৃ ভাষা দিবস। একে শহিদ দিবস বলা হয়। আবার অনেকে ভাষা দিবস বলে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। কারণ এই দিবস টি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কেননা এই দিনে অনেক বাঙালি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। প্রতি বছর দিন টি পালনের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানান দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস:
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর, প্যারিস অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি পাস হয় এবং ১৮৮টি দেশ একুশে ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে, ২০১০ সালে, প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে, ২০১০ সালের ২১ অক্টোবরে, জাতিসংঘ ঘোষণা করে যে, প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করবে। এই সিদ্ধান্তটি ১১৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে পাস হয়ে আসে।
একুশের স্মৃতিঃ
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের শাসনে বাংলা ভাষা কে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেশ করার দাবির জন্য একটি জোরদার আন্দোলন সৃষ্টি হয়। এই আন্দোলনের প্রমুখ উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভাষাকে মর্যাদার সাথে গণমাধ্যমে বিশ্বাসী করার দাবি।
পাকিস্তানি শাসক ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সকল প্রকার মিটিং, মিছিল, ও সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারপরও, বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল আয়োজন করে। সমাবেশের সময়ে, পুলিশ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় এবং এতে অনেক লোক নিহত হয়। এই হত্যাযজ্ঞ ও দমননীতির ফলে আন্দোলনের জোর আরও বাড়তে থাকে।
১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনের প্রভাবে বাংলাদেশের কবিসমাজকে একটি অমূল্য সংস্কার ঘটে। অনেক কবি এই আন্দোলনের প্রতি তাদের ভাবনা ও আত্মসমর্থন প্রকাশ করেন। কবি শামসুল রাহমান একটি উদাহরণ যা তার কবিতা “বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা” তে প্রকাশ পায়ঃ
‘তোমাকে উপড়ে নিলে, বলো তবে কী থাকে আমার?
ঊনিশ শো’ বাহান্নোর দারুণ রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি
বুকে নিয়ে আছো সগৌরবে মহীয়সী।
এই আন্দোলনের ফলে বাংলা ভাষা সরকারি কাজে ব্যবহৃত হতে থাকে এবং এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি গৌরবশীল অংশ হয়।
উপসংহারঃ
একুশ ফেব্রুয়ারি সম্মানিত হলেও সে আমাদের কাছে একটি মৌলিক দায়িত্বের চিহ্ন। ভাষা শহিদরা একুশে ফেব্রুয়ারির দিনে সাক্ষরতার প্রতি সমর্পণ করেছিলেন, এবং এটি আমাদের জীবনে একটি অমূল্য সংস্কৃতি হিসেবে থাকতে উদ্দীপ্ত করেছে। এই চেতনার মাধ্যমে, আমরা অতীত এবং ভবিষ্যতের মধ্যে আমাদের ভাষার অধিকার এবং মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারি। আমাদের প্রজন্মের মধ্যে, একুশের চেতনা জাগুক এবং এই উদ্দেশ্যে প্রতিবদ্ধ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি ২১ শে ফেব্রুয়ারি রচনা ২০০ শব্দ সংগ্রহ করেছেন।
আরও দেখুনঃ